বিশ্বের অনেক ধনী দেশ গত বছর করোনার টিকা মজুত করে কাটিয়েছে। নিজ দেশের জনগণকে টিকা দিতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডোজ কিনেছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পালন করেনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ধনী দেশগুলোর এ পন্থাকে ‘আত্মপরাজয়’ ও ‘অনৈতিক’ বলে মন্তব্য করেছে।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ধনী দেশগুলোর গৃহীত পন্থা এখন তাদের ওপর কামড় বসাতে শুরু করেছে। যে অঞ্চলে টিকা দেওয়ার হার সবচেয়ে কম, সেখান থেকেই করোনার নতুন ধরন এবং সম্ভাব্য আরও সংক্রমণযোগ্য ধরনের উদ্ভূত হয়েছে। গত মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও বতসোয়ানা, ইসরায়েল, হংকং, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, চেক প্রজাতন্ত্র ও অস্ট্রেলিয়ায় নতুন এ ধরনের সন্ধান মিলেছে।
ডব্লিউএইচও করোনার নতুন ধরনের নাম দিয়েছে ‘ওমিক্রন’। ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে সংস্থাটি। ধারণা করা হচ্ছে, করোনার আগের সব ধরনের চেয়ে এটি অনেক বেশি সংক্রামক। তবে ওমিক্রন করোনার অন্য ধরনের তুলনায় কম নাকি বেশি মারাত্মক, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা।
সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটির গ্লোবাল হেলথের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মাইকেল হেড সিএনএনকে বলেছেন, যেখানে জিনোমিক নজরদারি ও টিকা দেওয়ার হার কম, সেখান থেকে এ প্রাদুর্ভাব শুরু হতে পারে। করোনা ওই নতুন রূপের উত্থান বিশ্বে টিকা দেওয়ার হার ধীর গতির হওয়ার স্বাভাবিক পরিণতি। আফ্রিকার মতো অনেক অঞ্চল এখনো টিকাবিহীন রয়েছে, যেগুলো বড় প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে সংবেদনশীল। বিজ্ঞানী হেড আরও বলেন, ভাইরাসের নতুন রূপ যা অতীতেও সমস্যা সৃষ্টি করেছে। যেখানে বিশাল ও অনিয়ন্ত্রিত প্রাদুর্ভাব রয়েছে, সেখান থেকেই এর সূত্রপাত হয়েছে। যেমন গত ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্য আলফা ও ফেব্রুয়ারিতে ভারতে ডেলটা ধরন শনাক্ত হয়।