Home স্বাস্থ্য বাতরোগকে অবহেলা নয়

বাতরোগকে অবহেলা নয়

19
0

বাতরোগ বা আর্থ্রাইটিস নানা ধরন নিয়ে প্রকাশ পেতে পারে। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর ১২ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বিশ্ব আর্থ্রাইটিস দিবস।

ব্যথা বাতরোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অন্যতম উপসর্গ। কিন্তু ব্যথা নিজে কোনো রোগ নয়। ব্যথার চিকিৎসা করাতে হলে এর কারণ নির্ণয় করা প্রয়োজন আর সে জন্য ব্যথার নানা ধরন সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার।

নানা কারণে মানুষের হাড়ে বা সন্ধিতে ব্যথা হতে পারে। যেমন আঘাত, প্রদাহ, ভুল জীবনযাপন, বয়সজনিত ক্ষয়, অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি। এর বাইরে আছে পেশির ব্যথা, স্নায়ুর ব্যথা। আজ আমরা বাতরোগেই আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখব।

অনেকেরই ধারণা, বাতরোগ কেবল বয়স্ক ব্যক্তিদের সমস্যা। ধারণাটি ভুল। বাত যেকোনো বয়সে হতে পারে। এমনকি শিশুদেরও বাতরোগ আছে। তবে বয়স্কদের এ সমস্যা বেশি। কারণ, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড়, সন্ধি, পেশির নানা পরিবর্তন ঘটে। হাড়ের ঘনত্ব কমে গিয়ে ভঙ্গুর হয়ে যায় (অস্টিওপোরোসিস)। তবে এটি ব্যথাহীন একটি সমস্যা। সন্ধি বা গিরা যখন ক্ষয় হতে থাকে, তখন একে বলে অস্টিওআর্থ্রাইটিস।

এ ধরনের আর্থ্রাইটিসে জীবনযাপনে পরিবর্তন, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম, ফিজিওথেরাপির পাশাপাশি ব্যথানাশক ওষুধের দরকার হয়। কিন্তু বাতরোগ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ধরনের ওষুধ জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা না করালে বাতরোগ থেকে গিরা নষ্ট হয়ে পঙ্গুত্ব বা বিকলাঙ্গতা হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।

কীভাবে বুঝবেন

যদি গিরায় ব্যথার পাশাপাশি গিরাটি ফুলে যায় বা লাল হয়ে যায়, প্রদাহ হয়।

ব্যথার পাশাপাশি ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে সন্ধিজড়তা, বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বা টানা বিশ্রামের পর।

হাত–পায়ের একাধিক ছোট ছোট সন্ধি আক্রান্ত হওয়া।

ব্যথার পাশাপাশি সন্ধি বাঁকা হয়ে যাওয়া, সন্ধির অক্ষমতা।

কোমর বা পিঠের ব্যথা সকালের দিকে বেশি হওয়া বা ভোররাতে ব্যথার কারণে ঘুম ভেঙে যাওয়া।

সকালবেলা গোড়ালিতে ব্যথা হওয়া।

পরিবারে বাতব্যথার ইতিহাস, ত্বকের রোগ সোরিয়াসিস বা চোখের রোগ ইউভিউয়াইটিস থাকার ইতিহাস।

ব্যথার সমস্যা শুরুর এক-দেড় মাস আগে থেকে পাতলা পায়খানা, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ইত্যাদি থাকা।

এসব উপসর্গ বা গিরাব্যথা ছাড়াও অন্য কিছু উপসর্গও বাতরোগকে নির্দেশ করতে পারে। যেমন দীর্ঘমেয়াদি জ্বরের কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, ঠান্ডায় হাতের ত্বকের রং পরিবর্তন, মুখের তালুতে ঘা, আলোক সংবেদনশীলতা বা রোদে গেলে ত্বক জ্বালাপোড়া, ত্বকে র‌্যাশ, ত্বক টান টান হতে থাকা, আঙুলের মাথায় গ্যাংগ্রিন, পেশির দুর্বলতা, বারবার গর্ভপাত, শরীরে পানি আসা বা ফোলা ইত্যাদি।

চিকিৎসা

  • বাতরোগ হলে কেবল ব্যথানাশক ওষুধ বা ব্যায়ামে হবে না, বিশেষ ধরনের রোগ নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ খেতে হবে।

  • বাতরোগ পুরোপুরি সারে না, তবে সঠিক চিকিৎসায় একে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।